ঈদে কেনাকাটা করেনা এমন মানুষ খুজেপাওয়া মুশকিল । সকলেই জার যার সাধ্যমত ঈদের কেনাকাটা করেথাকে । সম্প্রতি আমি এবং আমার ফ্রেন্ড জায়েদ এলিফেন রোডে গিয়েছিলাম জায়েদের জন্য একজোড়া জুতা কিনতে । জুতার দোকার গুরতেছি তো গুরতেছি জুতা দেখতেছি তো দেখতেছি দোস্তোর কোন জুতাই পছন্দ হয়না । প্রায় দের-ঘণ্টা পড় আরেক জনের জুতা কেনা দেখে জায়েদের সেই জুতাজোরা পছন্দ হল । জুতানিরে বল্লাম ভাই ঐরকম একজোড়া জুতা দেন । জুতানি একবার বড় জুতা আনে আরেকবার ছোট জুতা আনে । ভাই একটু বসেন , গোডাউনে পাঠাইছি । আধাঘণ্টা বসার পড় এক জড়া জুতা আসলো , ভাই এইটা তো সেই জুতানা । ও ভাই আরেকটু বসেন । শেস পর্যন্ত একজোড়া পাওয়া গেলো ।
কোনকিছু যদি আগেথেকে পছন্দ না থেকে তাহলে মার্কেটে গিয়ে পছন্দ করা মুশকিল । তো কেনাকাটা সহজ কড়ার জন্য কয়েকটা টিপস ।
এ সময়ে মার্কেট এবং শপিং মলগুলোতে একটু বেশি ভিড় থাকে। তাই বেশি খুঁতখুঁত করা যাবে না। কম সময়ের মধ্যেই কিনে ফেলতে হবে পছন্দের জিনিসটি। আবার হুট করে ট্রেন্ডি মনে হলেই কোনো কিছু কিনে ফেলা ঠিক হবে না। কেনার আগে পরখ করে নিন তা আপনার বা প্রিয়জনের ব্যক্তিত্বের সাথে যায় কিনা।মোটামুটি বাজেট থাকলে ছোটখাট দোকানে না গিয়ে ভালো এবং বড় কোনো শপিং মল বা মার্কেটে চলে যাওয়াই ভালো । এতে ভালো পণ্য পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বিভিন্ন ব্রান্ডের জিনিস একসাথে এক জায়গাতেই পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে, বিশেষ করে উৎসবের সময় ডিসকাউন্টও পাওয়া যায। ফলে পছন্দের জিনিস কমসময়ে এবং তুলনামূলক সুলভ দামে কেনা যায়।
১। শপিংএ যাবার আগে প্রয়োজনীয় পণ্যের একটি তালিকা করে ফেলুন। এতে কম সময়েই আনেক প্রয়োজনীয় পণ্য কেনা সম্ভব হবে।
২। ঠিক করে নিন কাকে কেমন দামের মধ্যে পোশাক ও আনুষঙ্গিক জিনিস কিনে দেবেন। এতে করে অযথা ঘোরাঘুরির পেছনে সময় নষ্ট হবে না।
৩। শপিংএ যাওয়ার প্রস্তুতি নিন। বাইরে ভ্যাপসা গরম, এ সময় স্বাভাবিক সুতি পোশাক পরুন।
৪। যদি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শপিংমলে না যান তবে বাচ্চাদের না নেওয়াই ভালো।
শিশুদের পোশাক কেনার দিন তাদের সাথে নিন এবং তাদের পছন্দ মতো পোশাক কিনুন।
৫। সব কেনাকাটা একদিনে না করে, কয়েক বারে করুন। এতে যা কিনছেন সেগুলোর মান ভালো থাকবে।
৬। কেনার সময়ে পোশাকের রঙ, সেলাই, মান এবং দাম ভালো করে দেখে নিন। কোনো সমস্যা থাকলে বদলে নিন।
৭। কেনাকাটা শেষে বিল দেবার পর, বিলের তালিকার সাথে জিনিসের সংখ্যা মিলিয়ে নিন। এতে ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে না।
৮। বিল রিসিট ফেলে না দিয়ে কিছুদিন রেখে দিন। হঠাৎ কোনো জিনিস বদলানোর সময় কাজে লাগবে।
৯। বড় শপিংমলগুলো ঈদের কেনাকাটায় পুরস্কার ঘোষণা করে। কুপন সংরক্ষণ করুন। একটি শাড়ী কিনে হয়তো শাড়ীর সাথে সাড়ী , কপাল ভালো হলে গাড়িও জিতে যেতে পারেন।
কেনাকাটা তো হোল , এবার যারা এই ঈদে গ্রামের বাড়ি যাবেন তাদের জন্য কিছু দরকারি টিপসঃ
আপনার বাসা হতে বের হবার আগে দেখে নিন
১। জানালা ঠিকমত লাগানো হয়েছে কিনা।
২। রান্না ঘরের গ্যাসের চুলা বন্ধ আছে কিনা।
৩। দরজা-জানালা ভাঙ্গা থাকলে সেটা অবশ্যই ঠিক করে যেতে পারেন। (না হলে মিঃ চোর মামা আপনার বাসায় ঢুকে ২ -৩ দিন ধরে বসে-বসে চা বানিয়ে খেতে পারে)।
৪। লাইট, ফ্যান বন্ধ আছে কিনা,বাথরুমের পানির কল খোলাআছে কিনা দয়া করে একটু দেখে যাবেন।
৫। যাবার আগে বাড়ীর মালিককে দেখে রাখার ব্যাপারে বলতে পারেন।
৬। আপনার সামনের ফ্লাটের খালাম্মা , আপা ও আনটিকে বলতে পারেন একটু খেয়াল রাখার জন্য ।
৭। আপনার মোবাইল,লাগেজ,ছোট ব্যাগ খুব সাবধানে নিবেন।
৮। ও আর একটা কথা অপরিচিত লোকের দেওয়া কিছু ভুলেও খাবেননা।
৯।। কয়েক প্যাকেট স্যালাইন সাথে করে নিয়ে যাবেন মনে করে।
১০। গ্রামে কিন্তু বেশ লোড শেডিং হয়। তাই পাখা, চার্জার লাইট নিতে ভুলবেনা।
আরকি " ঈদের সুভেচ্ছা "
আমি আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি বাড়িতে মা , বোন ও ভাবী ঈদের আগের দিন ঈদের প্রস্তুতিতে এতো বাস্ত থাকে যে মাথার চুলটা পর্যন্ত আঁচড়াতে ভুলেজায় । আর মেয়েদের সাজগোজ করতে একটু বেশি সময় দিতেহয় । তাই তাদের জন্য ঈদের সাজগোজের কয়েকটা টিপস । আশাকরি ভালো লাগবে ।
ঈদের ২ থেকে ৩ দিন আগে
ফেসিয়াল হেয়ার কাট থ্রেডিং যেমন আই ব্রো, আপার লিপস, ফুল ফেস ইত্যাদি ওয়েক্সিং যেকোনো কেমিক্যাল হেয়ার ট্রিটমেন্ট যেমন হেয়ার কালার, হাইলাইট রিবন্ডিং, পামিং অথবা স্টেইটনিং ইত্যাদি।
হারবাল হেয়ার ট্রিটমেন্ট চুলের ধরন ও কন্ডিশন অনুযায়ী।
এই সপ্তাহে এসে আপনার ত্বক ঈদের বিশেষ দিনটির জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। যদিও অনেকে ঈদের আগের দিন ওয়েক্সিং করতে চান। কিন্তু কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে, তাই অন্তত ৫ দিন আগে ওয়েক্সিং করালে ভালো হয়। থ্রেডিং-এর কাজটা আগে থেকে করালেই ভালো। এ সপ্তাহে চুলের যতেœর কথা ভুলেও বলবেন না।
ঈদের আগের দিন
ম্যানিকিউর পেডিকিউর হেয়ার রিবন সেন্টিং, হেয়ার স্টোন সেটিং অথবা হেয়ার এক্সটেনশন ইত্যাদি। পায়ে নখে নেইলপলিশ অ্যাপ্লিকেশন হাতের নখে নেইলপলিশ অ্যাপ্লিকেশন হাতে ও পায়ে মেহেদির আল্পনা।
ঈদের একদিন আগে অবশ্যই আপনার হাতে পায়ের নখে চূড়ান্ত শেপ দিতে হবে। ঈদের দিন দেখবেন আপনার পায়ের নান্দনিক রূপের কাছে আপনার পছন্দের স্যান্ডেলকে কতখাানি ম্লান দেখাচ্ছে। আর হ্যাঁ পায়ের নখে নেইল পলিশ লাগাতে ভুলবেন না। তাহলে নখের সাজ ফুটে উঠবে না। প্রয়োজনে বিউটি এক্সপার্টের সাহায্য নিন। সেবাগুলো নেয়ার একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে মেহেদি লাগাবেন এবং ঈদের দিনে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করার সময় অবশ্যই কিচেন গ্লাভস পরে নেবেন। রঙ সুন্দরভাবে বসার জন্য ৫/৭ ঘণ্টা মেহেদি রেখে দেওয়া ভালো এবং এ সময়ের মধ্যে এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যা আপনার মেহেদির ডিজাইনকে নষ্ট করে দিতে পারে।
ঈদের সাজ, হেয়ারস্টাইল এবং অন্যান্য
ঈদের সকালে আটপৌরে সাজে আপনাকে হয়তোবা সারাটা দিনই মোটামুটি বাসায় থেকে রান্না-বান্না করে আর মেহমান সামলাতেই দিনের অনেকটা সময় পার করে দিতে হবে। দিনের শুরুতেই নিজের জন্য কিছুটা সময় বের করে নিন।
কেননা সারাদিনে আপনি নিজেকে সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখার আর কোনো সুযোগ নাও পেতে পারেন। মেকআপের শুরুতে একইভাবে ক্লিনজিং, টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং করে নিন। কিচেনে যদি অনেকটা সময় কাটাতে হয় ওয়াটার বেজড লিকুইড ফাউন্ডেশন লাগাতে পারেন অথবা ক্রিম ফাউন্ডেশন হালকা করার জন্য এতে খানিকটা পানি অথবা গোলাপ জল মিলিয়ে নিতে পারেন; এরপর পাউডার বুলিয়ে নিন। পেন্সিল আইলাইনার দিয়ে চোখের ল্যাশ বরাবর লাইন আঁকুন এবং মাসকারা লাগিয়ে নিন। চোখের পাতায় ব্রাউন কালারের আইশ্যাডো ও ব্লাশার লাগিয়ে নিন। ঠোঁট এঁকে নিয়ে পছন্দের লিপ কালার দিয়ে ঠোঁট ভরিয়ে নিন। এরপর আপনি শাড়ি ও জুয়েলারি পরে নিন। সকালের এই সাজে ম্যাট লুক রাখার চেষ্টা করুন। এই চিরায়ত ঘরোয়া সাজের সঙ্গে হাত খোঁপা করে
চুল আটকানোর কাঁটা দিয়ে ভালোভাবে আটকে নিন।
গোধূলি বেলায়
দিনের এইভাগে আপনি চাইলে শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ যা অভিরুচি তাই পরতে পারেন। হাল ফ্যাশনের ট্রেন্ড অনুযায়ী সালোয়ার-কামিজ পছন্দ করতে পারেন; তবে খেয়াল রাখুন আপনার সঙ্গে যেন অবশ্যই মানানসই হয়।
লিখেছেনঃ বর্ষা গাঙ্গুলী স্টাইল
0 comments:
Post a Comment